কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিন শিক্ষিত বেকার তরুণ উদ্যোক্তা নতুন জাতের গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখেছে। দেড় বিঘা জমিতে আশি হাজার টাকা খরচ করে আয় করার সুযোগ হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। ফলে আগ্রহি হয়ে উঠছেন অন্যান্য চাষিরা। জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, এভাবেই কুড়িগ্রামের কৃষি বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তর হবে।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন হরিশ্বর তালুক গ্রামে তিন শিক্ষিত বেকার তরুণ উদ্যোক্তা এবার গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষ করেছেন। অনার্স পড়–য়া এই তিন বন্ধু করোনাকালিন সময়ে পড়াশুনা বন্ধ থাকায় পরিবারকে সহায়তা করতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে জেলায় প্রথমবারের মত এই জাতের তরমুজ চাষ করেন। ঢাকার ইম্পর্টারের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা থেকে ৭০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করা হয়। বীজ ছিটিয়ে ৭ দিনের চারা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রোপন করা হয়। দেড় বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। দুই মাস দুই দিনের মাথায় টকটকে হলুদ রঙের বাহারি তরমুজ উত্তোলন করতে পেরেছে তারা। খরচ মিটিয়ে দেড় লক্ষ টাকার উপরে আয় করার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় খুশি এই তিন উদ্যোক্তা।
নুরালম, তরুন উদ্যোক্তা বলেন অভাবের কারণে ঢাকায় কাজ করতে গিয়েছি। পরে অনেক ভেবেছি এলাকায় কিছু করা যায় কিনা। কৃষি নিয়ে অনেক আগ্রহ ছিল। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উচ্চ ফলনশীল তরমুজ চাষে আগ্রহি হয়ে উঠি।
আমরা তিন বন্ধু দেড় বছর ধরে বাসায় বসে ছিলাম। পরিবারে স্বচ্ছলতার জন্য তাইওয়ান জাতের গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ চাষে আগ্রহি হয়ে উঠি। এই এলাকার মাটিতে গবেষণামূলক চাষ করে আমরা সফল হয়েছি। আমরা চাই আমাদের দেখে অন্যান্য যুবকরা আগ্রহি হয়ে উঠুক।
সম্পা আকতার, রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার, কুড়িগ্রাম বলেন তাইওয়ান থেকে এর বীজ আনা হয়েছে। এই তরমুজে দ্বিগুণ পুষ্টিমান ও মিষ্টতা রয়েছে। আমরা বাণিজ্যিকভাবে এর প্রসার করতে পারলে অনেক তরুণকে কৃষিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবো।
স্থানীয় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরা চাই অন্যান্যরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এই তরমুজ চাষে এগিয়ে আসুক।
কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কুড়িগ্রাম বলেন এ জেলায় এটি প্রথম বাণিজ্যিক ফসল। এটি লাভজনক ফসল। তরুন উদ্যোক্তারা এটি বাণিজ্যিক দৃষ্টিতে ধারণ করেছে। আমরা আশা করবো এভাবেই কুড়িগ্রামের কৃষি বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তর হবে।